Part 18

 

23 Al-Mu’minûn

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[23:1]

মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে,

[23:2]

যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;

[23:3]

যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,

[23:4]

যারা যাকাত দান করে থাকে

[23:5]

এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে

[23:6]

তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না

[23:7]

অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে

[23:8]

এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুশিয়ার থাকে

[23:9]

এবং যারা তাদের নামাযসমূহের খবর রাখে

[23:10]

তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে

[23:11]

তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবেতারা তাতে চিরকাল থাকবে

[23:12]

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি

[23:13]

অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি

[23:14]

এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছিনিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়

[23:15]

এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে

[23:16]

অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে

[23:17]

আমি তোমাদের উপর সুপ্তপথ সৃষ্টি করেছি এবং আমি সৃষ্টি সম্বন্ধে অনবধান নই

[23:18]

আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম

[23:19]

অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্যে খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করেছিতোমাদের জন্যে এতে প্রচুর ফল আছে এবং তোমরা তা থেকে আহার করে থাক

[23:20]

এবং ঐ বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায় এবং আহারকারীদের জন্যে তৈল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে

[23:21]

এবং তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু সমূহের মধ্যে চিন্তা করার বিষয় রয়েছেআমি তোমাদেরকে তাদের উদরস্থিত বস্তু থেকে পান করাই এবং তোমাদের জন্যে তাদের মধ্যে প্রচুর উপকারিতা আছেতোমরা তাদের কতককে ভক্ষণ কর

[23:22]

তাদের পিঠে ও জলযানে তোমরা আরোহণ করে চলাফেরা করে থাক

[23:23]

আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলামসে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী করতিনি ব্যতীত তোমাদের কোন মাবুদ নেইতোমরা কি ভয় কর না

[23:24]

তখন তার সম্প্রদায়ের কাফের-প্রধানরা বলেছিলঃ এ তো তোমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়সে তোমাদের উপর নেতৃত্ব করতে চায়আল্লাহ ইচ্ছা করলে ফেরেশতাই নাযিল করতেনআমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এরূপ কথা শুনিনি

[23:25]

সে তো এক উম্মাদ ব্যক্তি বৈ নয়সুতরাং কিছুকাল তার ব্যাপারে অপেক্ষা কর

[23:26]

নূহ বলেছিলঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর; কেননা, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে

[23:27]

অতঃপর আমি তার কাছে আদেশ প্রেরণ করলাম যে, তুমি আমার দৃষ্টির সামনে এবং আমার নির্দেশে নৌকা তৈরী করএরপর যখন আমার আদেশ আসে এবং চুল্লী প্লাবিত হয়, তখন নৌকায় তুলে নাও, প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া এবং তোমার পরিবারবর্গকে, তাদের মধ্যে যাদের বিপক্ষে পূর্বে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের ছাড়াএবং তুমি জালেমদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো না নিশ্চয় তারা নিমজ্জত হবে

[23:28]

যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা নৌকায় আরোহণ করবে, তখন বলঃ আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদেরকে জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে উদ্ধার করেছেন

[23:29]

আরও বলঃ পালনকর্তা, আমাকে কল্যাণকর ভাবে নামিয়ে দাও, তুমি শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী

[23:30]

এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং আমি পরীক্ষাকারী

[23:31]

অতঃপর অন্য এক সম্প্রদায় আমি তার স্থলাভিষিক্ত করেছিলাম

[23:32]

এবং তাদেরই একজনকে তাদের মধ্যে রসূলরূপে প্রেরণ করেছিলাম এই বলে যে, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী করতিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন মাবুদ নেইতবুও কি তোমরা ভয় করবে না?

[23:33]

তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানরা যারা কাফের ছিল, পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা বলত এবং যাদেরকে আমি পার্থিব জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছিলাম, তারা বললঃ এতো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয় তোমরা যা খাও, সেও তাই খায় এবং তোমরা যা পান কর, সেও তাই পান করে

[23:34]

যদি তোমরা তোমাদের মতই একজন মানুষের আনুগত্য কর, তবে তোমরা নিশ্চিতরূপেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে

[23:35]

সে কি তোমাদেরকে এই ওয়াদা দেয় যে, তোমরা মারা গেলে এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হলে তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে?

[23:36]

তোমাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে, তা কোথায় হতে পারে?

[23:37]

আমাদের পার্থিবজীবনই একমাত্র জীবনআমরা মরি ও বাঁচি এখানেই এবং আমারা পুনরুত্থিত হবো না

[23:38]

সে তো এমন ব্যক্তি বৈ নয়, যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে এবং আমরা তাকে বিশ্বাস করি না

[23:39]

তিনি বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর, কারণ তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে

[23:40]

আল্লাহ বললেনঃ কিছু দিনের মধ্যে তারা সকাল বেলা অনুতপ্ত হবে

[23:41]

অতঃপর সত্য সত্যই এক ভয়ংকর শব্দ তাদেরকে হতচকিত করল এবং আমি তাদেরকে বাত্যা-তাড়িত আবর্জনা সদৃশ করে দিলাম অতঃপর ধ্বংস হোক পাপী সম্প্রদায়

[23:42]

এরপর তাদের পরে আমি বহু সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি

[23:43]

কোন সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট কালের অগ্রে যেতে পারে নাএবং পশ্চাতেও থকাতে পারে না

[23:44]

এরপর আমি একাদিক্রমে আমার রসূল প্রেরণ করেছিযখনই কোন উম্মতের কাছে তাঁর রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলেছেঅতঃপর আমি তাদের একের পর এক ধ্বংস করেছি এবং তাদেরকে কাহিনীর বিষয়ে পরিণত করেছিসুতরাং ধ্বংস হোক অবিশ্বাসীরা

[23:45]

অতঃপর আমি মূসা ও হারুণকে প্রেরণ করেছিলাম আমার নিদর্শনাবলী ও সুস্পষ্ট সনদসহ,

[23:46]

ফেরআউন ও তার অমাত্যদের কাছে অতঃপর তারা অহংকার করল এবং তারা উদ্ধত সম্প্রদায় ছিল

[23:47]

তারা বললঃ আমরা কি আমাদের মতই এ দুই ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব; অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাস?

[23:48]

অতঃপর তারা উভয়কে মিথ্যাবাদী বললফলে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হল

[23:49]

আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ পায়

[23:50]

এবং আমি মরিয়ম তনয় ও তাঁর মাতাকে এক নিদর্শন দান করেছিলামএবং তাদেরকে এক অবস্থানযোগ্য স্বচ্ছ পানি বিশিষ্ট টিলায় আশ্রয় দিয়েছিলাম

[23:51]

হে রসূলগণ, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুনআপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত

[23:52]

আপনাদের এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা; অতএব আমাকে ভয় করুন

[23:53]

অতঃপর মানুষ তাদের বিষয়কে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছেপ্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে

[23:54]

অতএব তাদের কিছু কালের জন্যে তাদের অজ্ঞানতায় নিমজ্জত থাকতে দিন

[23:55]

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে যাচ্ছি

[23:56]

তাতে করে তাদেরকে দ্রুত মঙ্গলের দিকে নিয়ে যাচ্ছি? বরং তারা বোঝে না

[23:57]

নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তার ভয়ে সন্ত্রস্ত,

[23:58]

যারা তাদের পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে,

[23:59]

যারা তাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করে না

[23:60]

এবং যারা যা দান করবার, তা ভীত, কম্পিত হৃদয়ে এ কারণে দান করে যে, তারা তাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করবে,

[23:61]

তারাই কল্যাণ দ্রুত অর্জন করে এবং তারা তাতে অগ্রগামী

[23:62]

আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করি নাআমার এক কিতাব আছে, যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না

[23:63]

না, তাদের অন্তর এ বিষয়ে অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এ ছাড়া তাদের আরও কাজ রয়েছে, যা তারা করছে

[23:64]

এমনকি, যখন আমি তাদের ঐশ্বর্যশালী লোকদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব, তখনই তারা চীৎকার জুড়ে দেবে

[23:65]

অদ্য চীৎকার করো নাতোমরা আমার কাছ থেকে নিস্কৃতি পাবে না

[23:66]

তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ শোনানো হত, তখন তোমরা উল্টো পায়ে সরে পড়তে

[23:67]

অহংকার করে এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প-গুজব করে যেতে

[23:68]

অতএব তারা কি এই কালাম সম্পêেক চিন্তা-ভাবনা করে না? না তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে, যা তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে আসেনি?

[23:69]

না তারা তাদের রসূলকে চেনে না, ফলে তারা তাঁকে অস্বীকার করে?

[23:70]

না তারা বলে যে, তিনি পাগল ? বরং তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন এবং তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে

[23:71]

সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনার অনুসারী হত, তবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এগুলোর মধ্যবর্তêী সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়তবরং আমি তাদেরকে দান করেছি উপদেশ, কিন্তু তারা তাদের উপদেশ অনুধাবন করে না

[23:72]

না আপনি তাদের কাছে কোন প্রতিদান চান? আপনার পালনকর্তার প্রতিদান উত্তম এবং তিনিই রিযিকদাতা

[23:73]

আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন;

[23:74]

আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারা সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে

[23:75]

যদি আমি তাদের প্রতি দয়া করি এবং তাদের কষ্ট দূর করে দেই, তবুও তারা তাদের অবাধ্যতায় দিশেহারা হয়ে লেগে থাকবে

[23:76]

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হল না এবং কাকুতি-মিনুতিও করল না

[23:77]

অবশেষে যখন আমি তাদের জন্য কঠিন শাস্তির দ্বার খুলে দেব, তখন তাতে তাদের আশা ভঙ্গ হবে

[23:78]

তিনি তোমাদের কান, চোখ ও অন্তঃকরণ সৃষ্টি করেছেন; তোমরা খুবই অল্প কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে থাক

[23:79]

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে রেখেছেন এবং তারই দিকে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে

[23:80]

তিনিই প্রাণ দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান এবং দিবা-রাত্রির বিবর্তন তাঁরই কাজ, তবু ও কি তোমরা বুঝবে না?

[23:81]

বরং তারা বলে যেমন তাদের পূর্ববর্তীরা বলত

[23:82]

তারা বলেঃ যখন আমরা মরে যাব এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব ?

[23:83]

অতীতে আমাদেরকে এবং আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এই ওয়াদাই দেয়া হয়েছেএটা তো পূর্ববতীদের কল্প-কথা বৈ কিছুই নয়

[23:84]

বলুন পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তারা কার? যদি তোমরা জান, তবে বল

[23:85]

এখন তারা বলবেঃ সবই আল্লাহর বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?

[23:86]

বলুনঃ সপ্তাকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে?

[23:87]

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহবলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?

[23:88]

বলুনঃ তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কতৃর্êত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ?

[23:89]

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহরবলুনঃ তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে?

[23:90]

কিছুই নয়, আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী

[23:91]

আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেইথাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেততারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র

[23:92]

তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে

[23:93]

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেখান,

[23:94]

হে আমার পালনকর্তা! তবে আপনি আমাকে গোনাহগার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করবেন না

[23:95]

আমি তাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম

[23:96]

মন্দের জওয়াবে তাই বলুন, যা উত্তমতারা যা বলে, আমি সে বিষয়ে সবিশেষ অবগত

[23:97]

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি,

[23:98]

এবং হে আমার পালনকর্তা! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি

[23:99]

যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন

[23:100]

যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনিকখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্রতাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত

[23:101]

অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না

[23:102]

যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম,

[23:103]

এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে

[23:104]

আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে

[23:105]

তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে

[23:106]

তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি

[23:107]

হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর; আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা গোনাহগার হব

[23:108]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না

[23:109]

আমার বান্দাদের একদলে বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছিঅতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম করতুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু

[23:110]

অতঃপর তোমরা তাদেরকে ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করতেএমনকি, তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল এবং তোমরা তাদেরকে দেখে পরিহাস করতে

[23:111]

আজ আমি তাদেরকে তাদের সবরের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে, তারাই সফলকাম

[23:112]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়?

[23:113]

তারা বলবে, আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছিঅতএব আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন

[23:114]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান করেছ, যদি তোমরা জানতে?

[23:115]

তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না?

[23:116]

অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেইতিনি সম্মানিত আরশের মালিক

[23:117]

যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ নেই, তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না

[23:118]

বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুনরহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী

 

24 An-Nûr

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[24:1]

এটা একটা সূরা যা আমি নাযিল করেছি, এবং দায়িত্বে অপরিহার্য করেছিএতে আমি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ

[24:2]

ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশকরে বেত্রাঘাত করআল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকমুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে

[24:3]

ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে

[24:4]

যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে নাএরাই নাফারমান

[24:5]

কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান

[24:6]

এবং যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নেই, এরূপ ব্যক্তির সাক্ষ্য এভাবে হবে যে, সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার সাক্ষ্য দেবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী

[24:7]

এবং পঞ্চমবার বলবে যে, যদি সে মিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহর লানত

[24:8]

এবং স্ত্রীর শাস্তি রহিত হয়ে যাবে যদি সে আল্লাহর কসম খেয়ে চার বার সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামী অবশ্যই মিথ্যাবাদী;

[24:9]

এবং পঞ্চমবার বলে যে, যদি তার স্বামী সত্যবাদী হয় তবে তার ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসবে

[24:10]

তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে এবং আল্লাহ তওবা কবুল কারী, প্রজ্ঞাময় না হলে কত কিছুই যে হয়ে যেত

[24:11]

যারা মিথ্যা অপবাদ রটনা করেছে, তারা তোমাদেরই একটি দলতোমরা একে নিজেদের জন্যে খারাপ মনে করো না; বরং এটা তোমাদের জন্যে মঙ্গলজনকতাদের প্রত্যেকের জন্যে ততটুকু আছে যতটুকু সে গোনাহ করেছে এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্যে রয়েছে বিরাট শাস্তি

[24:12]

তোমরা যখন একথা শুনলে, তখন ঈমানদার পুরুষ ও নারীগণ কেন নিজেদের লোক সম্পর্কে উত্তম ধারণা করনি এবং বলনি যে, এটা তো নির্জলা অপবাদ?

[24:13]

তারা কেন এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী উপস্থিত করেনি; অতঃপর যখন তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি, তখন তারাই আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী

[24:14]

যদি ইহকালে ও পরকালে তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকত, তবে তোমরা যা চর্চা করছিলে, তজ্জন্যে তোমাদেরকে গুরুতর আযাব স্পর্শ করত

[24:15]

যখন তোমরা একে মুখে মুখে ছড়াচ্ছিলে এবং মুখে এমন বিষয় উচ্চারণ করছিলে, যার কোন জ্ঞান তোমাদের ছিল না তোমরা একে তুচ্ছ মনে করছিলে, অথচ এটা আল্লাহর কাছে গুরুতর ব্যাপার ছিল

[24:16]

তোমরা যখন এ কথা শুনলে তখন কেন বললে না যে, এ বিষয়ে কথা বলা আমাদের উচিত নয়আল্লাহ তো পবিত্র, মহানএটা তো এক গুরুতর অপবাদ

[24:17]

আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন, তোমরা যদি ঈমানদার হও, তবে তখনও পুনরায় এ ধরণের আচরণের পুনরাবৃত্তি করো না

[24:18]

আল্লাহ তোমাদের জন্যে কাজের কথা স্পষ্ট করে বর্ণনা করেনআল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়

[24:19]

যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছেআল্লাহ জানেন, তোমরা জান না

[24:20]

যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকত এবং আল্লাহ দয়ালু, মেহেরবান না হতেন, তবে কত কিছুই হয়ে যেত

[24:21]

হে ঈমানদারগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো নাযে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবেযদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকত, তবে তোমাদের কেউ কখনও পবিত্র হতে পারতে নাকিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেনআল্লাহ সবকিছু শোনেন, জানেন

[24:22]

তোমাদের মধ্যে যারা উচ্চমর্যাদা ও আর্থিক প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন কসম না খায় যে, তারা আত্নীয়-স্বজনকে, অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর পথে হিজরতকারীদেরকে কিছুই দেবে না তাদের ক্ষমা করা উচিত এবং দোষক্রটি উপেক্ষা করা উচিততোমরা কি কামনা কর না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়

[24:23]

যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি

[24:24]

যেদিন প্রকাশ করে দেবে তাদের জিহবা, তাদের হাত ও তাদের পা, যা কিছু তারা করত;

[24:25]

সেদিন আল্লাহ তাদের সমুচিত শাস্তি পুরোপুরি দেবেন এবং তারা জানতে পারবে যে, অল্লাহই সত্য, স্পষ্ট ব্যক্তকারী

[24:26]

দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যেসচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যেতাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীনতাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা

[24:27]

হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না করএটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ

[24:28]

যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও, তবে অনুমতি গ্রহণ না করা পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করো নাযদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে ফিরে যাবেএতে তোমাদের জন্যে অনেক পবিত্রতা আছে এবং তোমরা যা কর, আল্লাহ তা ভালোভাবে জানেন

[24:29]

যে গৃহে কেউ বাস করে না, যাতে তোমাদের সামগ্রী আছে এমন গৃহে প্রবেশ করাতে তোমাদের কোন পাপ নেই এবং আল্লাহ জানেন তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর

[24:30]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করেএতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছেনিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন

[24:31]

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করেতারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করেমুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও

[24:32]

তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা ৎকর্মপরায়, তাদেরওতারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেনআল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ

[24:33]

যারা বিবাহে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেনতোমাদের অধিকারভুক্তদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চায়, তাদের সাথে তোমরা লিখিত চুক্তি কর যদি জান যে, তাদের মধ্যে কল্যাণ আছেআল্লাহ তোমাদেরকে যে, অর্থ-কড়ি দিয়েছেন, তা থেকে তাদেরকে দান করতোমাদের দাসীরা নিজেদের পবিত্রতা রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য কারো নাযদি কেহ তাদের উপর জোর-জবরদস্তি করে, তবে তাদের উপর জোর-জবরদস্তির পর আল্লাহ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু

[24:34]

আমি তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ, তোমাদের পূর্ববর্তীদের কিছু দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহ ভীরুদের জন্যে দিয়েছি উপদেশ

[24:35]

আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উদাহরণ যেন একটি কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্যতাতে পুতঃপবিত্র যয়তুন বৃক্ষের তৈল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তীজ্যোতির উপর জ্যোতি আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান তাঁর জ্যোতির দিকেআল্লাহ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত

[24:36]

আল্লাহ যেসব গৃহকে মর্যাদায় উন্নীত করার এবং সেগুলোতে তাঁর নাম উচ্চারণ করার আদেশ দিয়েছেন, সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে;

[24:37]

এমন লোকেরা, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামায কায়েম করা থেকে এবং যাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে নাতারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে

[24:38]

(তারা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে) যাতে আল্লাহ তাদের উৎকৃষ্টতর কাজের প্রতিদান দেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও অধিক দেনআল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রুযী দান করেন

[24:39]

যারা কাফের, তাদের কর্ম মরুভুমির মরীচিকা সদৃশ, যাকে পিপাসার্ত ব্যক্তি পানি মনে করেএমনকি, সে যখন তার কাছে যায়, তখন কিছুই পায় না এবং পায় সেখানে আল্লাহকে, অতঃপর আল্লাহ তার হিসাব চুকিয়ে দেনআল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী

[24:40]

অথবা (তাদের কর্ম) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে উদ্বেলিত করে তরঙ্গের উপর তরঙ্গ, যার উপরে ঘন কালো মেঘ আছেএকের উপর এক অন্ধকারযখন সে তার হাত বের করে, তখন তাকে একেবারেই দেখতে পায় নাআল্লাহ যাকে জ্যোতি দেন না, তার কোন জ্যোতিই নেই

[24:41]

তুমি কি দেখ না যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যারা আছে, তারা এবং উড়ন্ত পক্ষীকুল তাদের পাখা বিস্তার করতঃ আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই তার যোগ্য এবাদত এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি জানেতারা যা করে, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত

[24:42]

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে

[24:43]

তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ মেঘমালাকে সঞ্চালিত করেন, অতঃপর তাকে পুঞ্জীভূত করেন, অতঃপর তাকে স্তরে স্তরে রাখেন; অতঃপর তুমি দেখ যে, তার মধ্য থেকে বারিধারা নির্গত হয়তিনি আকাশস্থিত শিলাস্তুপ থেকে শিলাবর্ষণ করেন এবং তা দ্বারা যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা, তা অন্যদিকে ফিরিয়ে দেনতার বিদ্যুৎঝলক দৃষ্টিশক্তি যেন বিলীন করে দিতে চায়

[24:44]

আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটানএতে অর্ন্তদৃষ্টি-সম্পন্নগণের জন্যে চিন্তার উপকরণ রয়েছে

[24:45]

আল্লাহ প্রত্যেক চলন্ত জীবকে পানি দ্বারা সৃষ্টি করেছেনতাদের কতক বুকে ভয় দিয়ে চলে, কতক দুই পায়ে ভর দিয়ে চলে এবং কতক চার পায়ে ভর দিয়ে চলে; আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম

[24:46]

আমি তো সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ অবর্তীর্ণ করেছিআল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালনা করেন

[24:47]

তারা বলেঃ আমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং আনুগত্য করি; কিন্তু অতঃপর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তারা বিশ্বাসী নয়

[24:48]

তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্য যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে আহবান করা হয তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়

[24:49]

সত্য তাদের স্বপক্ষে হলে তারা বিনীতভাবে রসূলের কাছে ছুটে আসে

[24:50]

তাদের অন্তরে কি রোগ আছে, না তারা ধোঁকায় পড়ে আছে; না তারা ভয় করে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের প্রতি অবিচার করবেন? বরং তারাই তো অবিচারকারী ?

[24:51]

মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে তাদেরকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলেঃ আমরা শুনলাম ও আদেশ মান্য করলামতারাই সফলকাম

[24:52]

যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকে তারাই কৃতকার্য

[24:53]

তারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর কসম খেয়ে বলে যে, আপনি তাদেরকে আদেশ করলে তারা সবকিছু ছেড়ে বের হবেইবলুনঃ তোমরা কসম খেয়ো নানিয়মানুযায়ী তোমাদের আনুগত্য, তোমরা যা কিছু কর নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে জ্ঞাত

[24:54]

বলুনঃ আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলের আনুগত্য করঅতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তার উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে সে দায়ী এবং তোমাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে তোমরা দায়ীতোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবেরসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টরূপে পৌছে দেয়া

[24:55]

তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেনযেমন তিনি শাসনকতৃêত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে নাএরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য

[24:56]

নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও

[24:57]

তোমরা কাফেরদেরকে পৃথিবীতে পরাক্রমশালী মনে করো নাতাদের ঠিকানা অগ্নিকতই না নিকৃষ্ট এই প্রত্যাবর্তনস্থল

[24:58]

হে মুমিনগণ! তোমাদের দাসদাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পরএই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলার সময়এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেইতোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ বিবৃত করেনআল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়

[24:59]

তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োপ্রাপ্ত হয়, তারাও যেন তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি চায়এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের কাছে বর্ণনা করেনআল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়

[24:60]

বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য? প্রকাশ না করে তাদের বস্ত্র খুলে রাখেতাদের জন্যে দোষ নেই, তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্যে উত্তমআল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ

[24:61]

অন্ধের জন্যে দোষ নেই, খঞ্জের জন্যে দোষ নেই, রোগীর জন্যে দোষ নেই, এবং তোমাদের নিজেদের জন্যেও দোষ নেই যে, তোমরা আহার করবে তোমাদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতাদের গৃহে অথবা তোমাদের মাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভ্রাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভগিণীদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতৃব্যদের গৃহে অথবা তোমাদের ফুফুদের গৃহে অথবা তোমাদের মামাদের গৃহে অথবা তোমাদের খালাদের গৃহে অথবা সেই গৃহে, যার চাবি আছে তোমাদের হাতে অথবা তোমাদের বন্ধুদের গৃহে তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথকভবে আহার কর, তাতে তোমাদের কোন দোষ নেইঅতঃপর যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ কর, তখন তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবেএটা আল্লাহর কাছ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র দোয়াএমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্যে আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ননা করেন, যাতে তোমরা বুঝে নাও

[24:62]

মুমিন তো তারাই; যারা আল্লাহর ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় নাযারা আপনার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেঅতএব তারা আপনার কাছে তাদের কোন কাজের জন্যে অনুমতি চাইলে আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিন এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুনআল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান

[24:63]

রসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরকে আহ্বানের মত গণ্য করো নাআল্লাহ তাদেরকে জানেন, যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়েঅতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে

[24:64]

মনে রেখো নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে, তা আল্লাহরইতোমরা যে অবস্থায় আছ তা তিনি জানেনযেদিন তারা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে, সেদিন তিনি বলে দেবেন তারা যা করেছেআল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ই জানেন

 

25 Al-Furqân

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[25:1]

পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়,

[25:2]

তিনি হলেন যাঁর রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্বতিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননিরাজত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেইতিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে

[25:3]

তারা তাঁর পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং নিজেদের ভালও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না এবং জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনের ও তারা মালিক নয়

[25:4]

কাফেররা বলে, এটা মিথ্যা বৈ নয়, যা তিনি উদ্ভাবন করেছেন এবং অন্য লোকেরা তাঁকে সাহায্য করেছেঅবশ্যই তারা অবিচার ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে

[25:5]

তারা বলে, এগুলো তো পুরাকালের রূপকথা, যা তিনি লিখে রেখেছেনএগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে শেখানো হয়

[25:6]

বলুন, একে তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেনতিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান

[25:7]

তারা বলে, এ কেমন রসূল যে, খাদ্য আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে? তাঁর কাছে কেন কোন ফেরেশতা নাযিল করা হল না যে, তাঁর সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকত?

[25:8]

অথবা তিনি ধন-ভান্ডার প্রাপ্ত হলেন না কেন, অথবা তাঁর একটি বাগান হল না কেন, যা থেকে তিনি আহার করতেন? জালেমরা বলে, তোমরা তো একজন জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ

[25:9]

দেখুন, তারা আপনার কেমন দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে! অতএব তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এখন তারা পথ পেতে পারে না

[25:10]

কল্যানময় তিনি, যিনি ইচ্ছা করলে আপনাকে তদপেক্ষা উত্তম বস্তু দিতে পারেন-বাগ-বাগিচা, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত হয় এবং দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ

[25:11]

বরং তারা কেয়ামতকে অস্বীকার করে এবং যে কেয়ামতকে অস্বীকার করে, আমি তার জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করেছি

[25:12]

অগ্নি যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার গর্জন ও হুঙ্কার

[25:13]

যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে

[25:14]

বলা হবে, আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না অনেক মৃত্যুকে ডাক

[25:15]

বলুন এটা উত্তম, না চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে? সেটা হবে তাদের প্রতিদান ও প্রত্যাবর্তন স্থান

[25:16]

তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় সেখানে যা চাইবে, তাই পাবেএই প্রার্থিত ওয়াদা পূরণ আপনার পালনকর্তার দায়িত্ব

[25:17]

সেদিন আল্লাহ একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করত তাদেরকে, সেদিন তিনি উপাস্যদেরকে বলবেন, তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে পথভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই পথভ্রান্ত হয়েছিল?

[25:18]

তারা বলবে-আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পরিবর্তে অন্যকে মুরুব্বীরূপে গ্রহণ করতে পারতাম না; কিন্তু আপনিই তো তাদেরকে এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসম্ভার দিয়েছিলেন, ফলে তারা আপনার স্মৃতি বিস্মৃত হয়েছিল এবং তারা ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি

[25:19]

আল্লাহ মুশরিকদেরকে বলবেন, তোমাদের কথা তো তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করল, এখন তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও করতে পারবে নাতোমাদের মধ্যে যে গোনাহগার আমি তাকে গুরুতর শাস্তি আস্বাদন করাব

[25:20]

আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করতআমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছিদেখি, তোমরা সবর কর কিনাআপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন